Tuesday, September 26, 2017

মা দূর্গা /sanatan dharmer prachar

মা দূর্গা :

জগজ্জননী মা আমার।
মনে করুন মা দুই জন,এক জন গর্ভধারিণী মা অপরজন দূর্গা মা।আপনি কি জানেন কি করলে মা খুসি হয়,কি ভাবে মার সেবা করলে অনেক পূর্ণ হয়,কি কি করলে মা আমাদের অনেক আশীর্বাদ করেন? জানেন না তবে আজই শুরু করুন।প্রথমে নিজ মার সাথে করবেন,তারপর মা দূর্গার সামনে করবেন।ভুলেও কিন্তু নিজ মাকে বাদ দিয়ে মা দূর্গার সামনে করতে যাবেন না,তাহলে কিন্তু মা দূর্গা রাগ করবেন।তখন কিন্তু আমাদের অনেক ক্ষতি হবে।
আমরা তো এখন বুঝে গেলাম,প্রথমে নিজ মা,তারপর মা দূর্গা। এখন দেখব পূর্ণ লাভ করতে কি কি করতে হবে।সবাই অভ্যাস করা শুরু করে দেন,প্রথমে নিজ মা।

১/ প্রতিদিন মার সামনে,অর্থাৎ মাকে দেখিয়ে দেখিয়ে মদ, গাজা,সিগারেট খাওয়া শুরু করে দেন।শুনেছি এতে নাকি অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভ হয়।

২/ মার সামনে অর্ধ উলঙ্গ হয়ে অর্থাৎ ছোট কাপড় বা টাইট কাপড় পড়ে ফোল সাউন্ডে হিন্দি গান দিয়ে নাচানাচি শুরু করে দেন।যদি অসভ্যের মত নাচতে পারেন,তবে আরো ভাল।শুনেছি এ রকম ভাবে মার সামনে ড্যান্স দিলে মা অনেক খুসি হন,অর্থাৎ স্বর্গ নিশ্চিত।

৩/ আপনেরা জেনে খুসি হবেন যে,প্রত্যেকের মা উচ্চ ভলিউমে হিন্দি গান শুনতে খুব ভালবাসেন। তাই মার সামনে বেশী বেশী হিন্দি গান বাজান।

৪/ অনেক সময় বড়রা হিন্দি গান বা অভক্তি মূলক গান বাজাতে নিষেধ করে।তাদের মুখের উপর বলে দেন,তরা মূর্খ, তদের বয়স হয়েছে তার সাথে বুদ্ধিও নষ্ট হয়েছে। হিন্দি গান ছাড়া মার পূজা হয় কোন দিন শুনেছেন।মা আর আগের দিনের নয়,সে এখন আধুনিক।সাউন্ড বক্স না হলে, আমরা পূজাই করবো না।

৫/ আরতির সময় বড় বড় মেয়েদের, ছোট ছোট কাপড় পড়ে নাচ দেখতে,মা খুব ভালবাসেন।এই দেহ দেখিয়ে নাচ,যত পুরুষদের অানন্দ দেয়,বিশেষ করে অহিন্দুদের, মা তত বেশী খুসি হন।

৬/ আপনেরা হয়তো লক্ষ্য করেছেন,প্রত্যেকের মা পশুর রক্ত খেতে খুব ভালবাসেন।তাই মার সামনে বেশী বেশী করে বলি দিবেন।কেউ বাধা দিলে শুনবেন না।মনে রাখবেন মার কিন্তু রক্ত ছাড়া তৃষ্ণা মিটে না।এটা তো সাধারণ জ্ঞান, আমরা জল পান করি আর মা রক্ত পান করেন।

নিশ্চয় মনে মনে ভাবতেছেন, এসব আচরন কি নিজ মার সাথে করা যায়।কেন যাবে না,এগুলো কি আমরা মা দূর্গার সাথে করি না।যিনি এই জগতের মা, তার সামনে করতে পারি,তাহলে নিজ মার সাথে পারবো না কেন? নাকি শুধু মাটির প্রতিমা,তাই কোন লজ্জা করে না।তাহলে এই মাটির পূজা করে কি লাভ এত খরচ করে,তার থেকে ব্যাংকে ডিপোজিট করি,ভবিষ্যৎকালে কাজে লাগবে।
কি রকম নির্লজ্জ, ছোটলোক আমরা। আমরা নিজ মার সামনে, নেশা করতে,অসভ্য পোশাক পড়ে নাচানাচি করতে লজ্জা পাই,কিন্তু যে বিশ্বজগতের মা,এক বছর পর যাকে ডেকে নিয়ে আসি,তার সামনে অসভ্যতা করতে এত টুকু লজ্জা পাই না।

পাপ কি? যাহা শাস্ত্রে নিষেধ করা আছে,তাহা করাই পাপ।তাহলে ধর্মের নাম করে, পাপ করাকে কি বলে, মহাপাপ। আগ্গে হা,আমরা এখন ধর্ম করার নামে পাপ করা শুরু করেছি,এমনিতেই কত পাপ করি,আবার ধর্মের নামেও পাপ করা শুরু করেছি।

তিন চারশত বছর পূর্ব থেকে,আস্তে আস্তে ব্যাপক ভাবে দূর্গা পূজা শুরু হয়েছে। আগে কিন্তু এই রকম অসভ্যতা ছিল না।কিছু দিন ধরে, এই অপসংস্কৃতি ডুকেছে। তাই যে ভাবে ডুকেছে, সেভাবেই বের করে দিন।

কি লজ্জার বিষয়,যখন অহিন্দুরা বলবে,তদের ধর্মে হিন্দি গান আছে,ছেলে মেয়েদের অসভ্য ভাবে নাচানাচি আছে,তখন ওদের কিভাবে সনাতন ধর্মের মাহাত্ম্য বুঝাবো।এ রকম আচরন করলে, আমাদের ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হবেতো দূরের কথা,উল্টো আরো ঘৃণা করবে।

তাহলে আমাদের কি করতে হবে, এটাই ভাববার বিষয় আসলে আমাদের কি করা উচিত।আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান এমনভাবে করতে হবে, যাতে কোন পাপ কর্ম না থাকে।
যেমন-

১/ যে কোন পূজা পবিত্র মনে করতে হবে।মন থাকবে সাত্ত্বিকতার ভাব,পূজার পরিবেশও সাত্ত্বিক ভাবে গড়ে তোলতে হবে।অধর্মের যেন কোন স্থান না হয়।

২/ কোন পূজায় হিন্দি গান অর্থাৎ অভক্তি মূলক গান বাজানো যাবে না।যদি গান বাজানোর ইচ্ছে থাকে, তবে হরে কৃষ্ণ কীর্তন, ভক্তিমূলক গান বা শ্যামা সঙ্গীত বাজানো যেতে পারে,এর বাহিরে অন্য কিছু নয়।

৩/ অর্ধ উলঙ্গ অর্থাৎ ছোট জামা বা টাইট জামা পড়া যাবে না , বিশেষ করে মেয়েদের।সব সময় লক্ষ রাখতে হবে পোশাকে যেন অসভ্যতা প্রকাশ না পায়।

৪/ পূজায় আরতী হয়, শাস্ত্রীয় নৃত্য হতে পারে,কিন্তু কোন ডিজে ড্যান্স, হিন্দি গানের সাথে অশ্লীল নাচ,এসব আচরন করা যাবে না।

৫/ মা দূর্গা ভগবানের শক্তি, তাই ভগবানের মত সম্মান করতে হবে।মার সামনে কোন রুপ অসভ্যতা করা যাবে না।

৬/ মার সামনে,বিশেষ করে পূজার কয়দিন,যে কোন প্রকার নেশা ও আমিষ গ্রহন করা যাবে না।

৭/ বিভিন্ন বাজে খরচ বাদ দিয়ে,সনাতন ধর্ম প্রচারের জন্য বা গীতা বা এই জাতীয় ভক্তি মূলক গ্রন্থ বা গরিব হিন্দুদের দান করা উচিত।

৮ আমাদের ধর্ম,আমাদেরই রক্ষা করতে হবে,তাই কোন অশোভন আচরন করবেন না।
আমরা যেন গর্বের সহিত বলতে পারি,আমরা গর্বিত, সনাতনধর্মে জন্মগ্রহণ করার জন্য।সনাতনধর্মই পৃথিবীতে শান্তি কামনা করে,তাই সবাই সুখি হউক,শান্তি লাভ করুক,পূজার আনন্দে সকল মানুষের মন ভরে থাকুক।

          জয় মা দূর্গা

   সমীর চন্দ্র পন্ডিত

No comments:

Post a Comment